Deshlai Kathi Bengali Poem for Event
“Deshlai Kathi” বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিখ্যাত কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের একটি শক্তিশালী এবং মর্মস্পর্শী কবিতা। 1940-এর দশকে রচিত এই কবিতাটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার উত্তাল সময়ে গ্রামবাংলার মানুষের সংগ্রাম ও দুর্ভোগকে স্পষ্টভাবে চিত্রিত করেছে। প্রখর চিত্রকল্প এবং প্রখর উদ্দীপক ভাষার সাথে, কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি ক্লাসিক এবং বাঙালি জনগণের বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রতিরোধ ও স্থিতিস্থাপকতার স্থায়ী চেতনার একটি শক্তিশালী প্রমাণ হয়ে উঠেছে।
Deshlai Kathi (দেশলাই কাঠি)
Sukanta Bhattacharya (সুকান্ত ভট্টাচার্য)
আমি একটা ছোট্ট দেশলাইয়ের কাঠি
এত নগণ্য, হয়তো চোখেও পড়ি নাঃ
তবু জেনো
মুখে আমার উসখুস করছে বারুদ-
বুকে আমার জ্বলে উঠবার দুরন্ত উচ্ছ্বাস;
আমি একটা দেশলাইয়ের কাঠি।
মনে আছে সেদিন হুলস্থূল বেধেছিল?
ঘরের কোণে জ্বলে উঠেছিল আগুন-
আমাকে অবজ্ঞাভরে না-নিভিয়ে ছুঁড়ে ফেলায়!
কত ঘরকে দিয়েছি পুড়িয়ে,
কত প্রাসাদকে করেছি ধূলিসাৎ
আমি একাই- ছোট্ট একটা দেশলাই কাঠি।
এমনি বহু নগর, বহু রাজ্যকে দিতে পারি ছারখার করে
তবুও অবজ্ঞা করবে আমাদের?
মনে নেই? এই সেদিন-
আমরা সবাই জ্বলে উঠেছিলাম একই বাক্সে;
চমকে উঠেছিলে-
আমরা শুনেছিলাম তোমাদের বিবর্ণ মুখের আর্তনাদ।
আমাদের কী অসীম শক্তি
তা তো অনুভব করেছ বারংবার;
তবু কেন বোঝো না,
আমরা বন্দী থাকবো না তোমাদের পকেটে পকেটে,
আমরা বেরিয়ে পড়ব, আমরা ছড়িয়ে পড়ব
শহরে, গঞ্জে , গ্রামে- দিগন্ত থেকে দিগন্তে।
আমরা বার বার জ্বলি, নিতান্ত অবহেলায়
তা তো তোমরা জানোই!
কিন্তু তোমরা তো জানো না:
কবে আমরা জ্বলে উঠব-
সবাই শেষবারের মতো!
—– সমাপ্ত ——-