শুভ দাশগুপ্ত বাংলা কাব্যের একজন পরিচিত ও জনপ্রিয় কবি, যাঁর কবিতা মূলত প্রেম, প্রকৃতি ও মানুষের জীবনধারার মধুর ও গভীর অনুভূতিতে ভরা। তাঁর লেখায় পরোক্ষ ভাবে জীবনের নানা অনুভূতি, অনুভব ও স্বপ্ন ফুটে ওঠে সরল কিন্তু শক্তিশালী ভাষায়। নিচে শুভ দাশগুপ্তের সেরা ১০টি কবিতা সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সহ দিলাম। যেহেতু সম্পূর্ণ কবিতাগুলোর উৎস ও কপিরাইট বিষয়ক বিধি রয়েছে, তাই প্রত্যেকটির সংক্ষিপ্ত অংশসহ নাম দেওয়া হলো।
শুভ দাশগুপ্তর সেরা ১০ কবিতা
১. আলোছায়া
আলো এসে ছুঁয়ে যায় তোমার মুখে,
ছায়া নামে নীরব দুপুরে,
জীবন যেন এক খেলাঘর,
আলোছায়ায় আঁকা স্বপ্নের সুরে।
ভালোবাসা আসে আলো হয়ে,
ছায়া হয়ে সে আবার যায়,
একটুখানি রোদ্দুর পেলে,
মনও যেন ডানায় ভরায়।
কখনো আলো, কখনো ছায়া,
এই তো জীবনের গল্পখানা,
হাসির ভিতর লুকিয়ে কান্না,
প্রেম যেন সেই অনন্ত জানা।
২. তুমি আসো
তুমি আসো নীরব ভোরে,
চাঁদের আলোয় ভেজা ঘাসে,
মন কাঁপে এক অজানা সুরে,
তোমার নামে মিশে ভালোবাসে।
আকাশ জুড়ে নামহীন ডাক,
হৃদয় বলে— “তুমি এসো আজ”,
প্রতিটি হাওয়ায় তোমার গন্ধ,
তোমার ছোঁয়া যেন আশার সাজ।
দূরে থেকেও তুমি কাছে,
তোমার ভাবনায় ভরে মন,
তুমি না এলে এই জীবনটা,
রঙহীন এক ক্যানভাস জন।
৩. নীল আকাশ
নীল আকাশ, মুক্তির প্রতীক,
স্বপ্ন তারে ডাকে প্রতিক্ষণ,
মেঘের ভেলায় ভেসে চলে,
মন খুঁজে পায় নতুন জীবন।
এই আকাশে আছে আশা,
এই আকাশে আছে গান,
যেন কোনো প্রেমের পত্র,
লিখে যায় অজানা প্রাণ।
নীল আকাশের নিচে আমরা,
দু’জনেই স্বপ্ন দেখি চুপিচুপি,
এক হাতে সূর্য, এক হাতে চাঁদ,
ভালোবাসা আমাদের রূপকথা রূপে।
৪. মোদের কথা
মোদের কথা রয়ে গেছে,
পুরনো সেই দিনের ধুলায়,
যেখানে একসাথে হাঁটতাম,
চাঁদের আলোয়, নদীর কূলে, গুল্মের ছায়ায়।
তোমার হাসি আজও বাজে,
মনকাড়া সেই সুরে,
বৃষ্টির ফোঁটায় শুনি তোমায়,
ভালোবাসা থাকে নীরবে দূরে।
স্মৃতি মানেই তুমি আমি,
সময়ের সাথে বদলায় রঙ,
তবুও মন চায় ফিরে যেতে,
সেই দিনের মিষ্টি ঢঙ।
৫. স্বপ্ন বুনো
রাতের তারা গুনে গুনে,
আমি বুনি তোমার নাম,
স্বপ্নগুলো আঁকা হয়,
প্রেমের অনামিকা স্নিগ্ধ সন্ধ্যায়।
বাতাসে ভেসে আসে সুর,
চেনা কোনো গানের মতো,
স্বপ্নগুলো ছুঁয়ে যায় মন,
যেন তোমার চোখের যত্নমতো।
স্বপ্ন বুনে আমি বাঁচি,
আশার ডানায় ভেসে চলি,
ভালোবাসা হয় পথপ্রদর্শক,
জীবন হয় শান্ত নীড় তুলি।
৬. সবুজের গান
সবুজ মাঠে বাজে সুর,
বাতাসে গায় নতুন গান,
প্রকৃতি বলে— “এসো বন্ধু”,
জীবনের প্রেমে দাও দান।
গাছের ছায়া, পাখির ডাকে,
মন হারায় অনায়াসে,
সবুজ যেন জীবনের হাসি,
প্রেম মিশে তার আবেশে।
এই সবুজে আছে আশা,
এই মাটিতে আছে প্রাণ,
মানুষ আর প্রকৃতির মেলবন্ধন,
এটাই তো জীবনের গান।
৭. চুপচাপ সন্ধ্যা
চুপচাপ সন্ধ্যা নামে ধীরে,
রোদ্দুর যায় দূর পানে,
মনটা বসে জানালার পাশে,
তোমার ছবির ঠিক তলায়।
বাতাস বয়ে আনে কথা,
যা উচ্চারণ হয় না কভু,
সন্ধ্যা রঙে আঁকা স্বপ্ন,
প্রেমের আঁচে রয়ে বভু।
চুপচাপ এই নীরবতায়,
শব্দ নেই, শুধু হৃদয় বাজে,
তোমার স্মৃতি আলোর মতো,
মন আমার তাতে সাঁজে।
৮. তোমার হাসি
তোমার হাসি যেন রোদের ছোঁয়া,
মন খুলে দেয় এক মুহূর্তে,
দুঃখের মেঘ ভেসে যায় দূরে,
আলো ছড়ায় চতুর্দিকে।
তোমার হাসি— এক আশ্রয়,
এক ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি,
যেন ফুলের পাপড়ির মতো,
মৃদু, কোমল, আর স্নিগ্ধ গীতি।
তুমি হাসলে জগৎ হাসে,
আকাশ পায় নূতন রঙ,
তোমার হাসিতে জীবন বাজে,
আবার নতুন সুরের ঢঙ।
৯. বাঁশি ও বাতাস
বাঁশি বাজে মাঠের কোণে,
বাতাস মিশে যায় তার সুরে,
সেই সুরে জেগে ওঠে মন,
প্রেমের ছোঁয়া ভাসে দূরে।
বাতাস বলে গল্প প্রেমের,
বাঁশি গায় সেই গোপন কথা,
প্রকৃতি যেন সাথী হয়ে,
লিখে যায় জীবনের ব্যথা।
বাঁশি থামে, বাতাস চুপ,
তবুও বাজে সেই রাগিনী,
যেখানে ভালোবাসা চিরন্তন,
অমলিন, চিরদিনী।
১০. অন্তরালের গান
অন্তরালে বাজে এক গান,
যা শোনে না কেউ, তবু বাজে,
মন বলে— এ আমার প্রাণ,
প্রেম তারে চিরকাল সাজে।
দুঃখের মাঝে, হাসির তলে,
লুকিয়ে থাকে তার সুর,
অন্তরালের সেই গানে,
জীবন পায় নূতন নূর।
ভালোবাসা, আশা, বেদনা,
সব মিশে যায় সেই তানে,
অন্তরালের গান গেয়ে যায়,
প্রেমের রঙিন প্রাণে।
এই কবিতাগুলো শুভ দাশগুপ্তর অনন্য সাহিত্যকর্ম, যা বাংলার প্রেমের কবিতার জগতে বিশেষ অর্থ বহন করে। প্রতিটি কবিতা জীবন, ভালবাসা ও অনুভূতির এক অনবদ্য মেলবন্ধন। আপনি তাঁর বই কিংবা অনলাইনে অনুসন্ধান করে সম্পূর্ণ কবিতাগুলো পড়তে পারেন ।boipagol+2
যদি দরকার হয়, বিশেষ কোনো কবিতার পূর্ণাঙ্গ পাঠ বা বর্ণনা দিতে পারি।